বুধবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৫

প্রকৃত পরিচয়

আমি আদিমতা ও আধুনিকতার অসম সেতুবন্ধন,
কাঁধের শুকপাখি, সহযাত্রী অশ্ব - এরাই আমার স্বজন।
বিপদসংকুল পথে চলাই আমার আজন্ম নেশা,
মেঘের ঘনঘটায় ইচ্ছাকৃতভাবে কাকভেজা হয়ে খুঁজি দিশা।

বোহেমিয়ান আমি, বাতাসে উড়িয়ে দেই উড়ো চিঠি,
কাগজের নৌকা ভাসাই অজানা বন্ধুর তরে লিখে দিঠি,
মনের কথা বার্তা পাঠাই লিখে বাদুড়ের ডানায়,
পত্র লিখে সন্তর্পণে বেঁধে দেই পায়রার পায়।

তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে রূপকথার রাজকন্যা যদি তা পায়!
নেহাত অসম্ভব। কিন্তু উত্তরের তরে উন্মুখ আমি উৎকণ্ঠায়।
আমি প্রব্রজ্যার ন্যায় খালি পায়ে হাঁটি রাজপথে,
ইচ্ছে হলে বন্ধু করে সহচর কোরো তব রথে।

বুধবার, ১ এপ্রিল, ২০১৫

অভিজ্ঞানপত্র

'যৌক্তিক দ্বিমতকে স্বাগতম Agree to logical disgaree' এই মন্ত্রকে জড় কোন ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন বা প্ল্যাকার্ডে নয় মস্তিষ্কের সজীব নিউরোনের অশোকলিপিতে খোদাই করে জমা হয়েছি আমরা সমাজ বিভেদিত নারী কিংবা পুরুষ নয় বরং চিন্তার দিক থেকে সংখ্যালঘু কতিপয় মানুষ। আর আমাদের এই বৈপরিত্যময় সুসম্পর্ককে এক অদৃশ্য মন্ডলে আবৃত করেছি যাকে আমরা আদর করে ডাকি ‘অভয়ারণ্য Sanctuary’। এটি কোন আনুষ্ঠানিক সংগঠন নয় বরং একে বলা যায় উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এতে প্রবেশ করলে আর্থিক কোন লাভ পাওয়ার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা নেই কিন্তু আত্মিক প্রশান্তি ও Love-এর কোন অভাব হবে না। এখানে কেউ আশরাফ আর কেউ আতরাফ নয় এতে সবাই চিন্তা রাজ্যের রাজপুত্র।
জ্ঞানের অন্ধত্বের জন্য আলোকপর্বের পরও যখন মুক্তচিন্তা মুকুলে বিনষ্ট হচ্ছে ঠিক তখন আমরা পরমত সহিষ্ণু গণতন্ত্রের ভিত্তিতে ব্যতিক্রম চিন্তার সংরক্ষণে সচেষ্ট। তাই আপনার সুপ্ত প্রতিভার গুপ্তধনকে সবার কাছে উন্মোচিত করার জন্য আপনাকে সাধুবাদ। ভয় নেই আমরা শুধু টেক্সটকেই অন্ধ অনুকরণ করি না কনটেক্সটের যৌক্তিকতায়ও আমাদের অসীম আগ্রহ।
তবে আমরা কাগজে কলমে স্বাক্ষরপূর্বক সভ্য মানুষে বিশ্বাসী নই। আমরা বিশ্বাস করি মানুষ জন্মগতভাবে সভ্য। তাই চিন্তাকে দুই মলাটে আবদ্ধ করতে ব্যর্থ হলেও দয়া করে স্বপ্নের সতীদাহ করবেন না। আপনি আমাদের সঙ্গে থাকুন নিয়মিত কথা দিচ্ছি আমরাই আপনাকে বারমাসী কোকিল হয়ে সঙ্গ দেব সব সময়।

মোটরসাইকেল ডায়েরিজঃ ৮০০ লীগস অন রোড



জীবনের ২২টি বসন্ত পার করলেও এখনো কেউ কথা রাখেনি। তাই কন্যা রাশির জাতক হয়েও এবং ৪র্থ শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় ২০০১ সালে মাধ্যমিক স্তরে পড়ুয়া এক আপুর কাছ থেকে প্রথম ভ্যালেন্টাইন'স কার্ড পাওয়া সত্বেও আমি এখনো সিঙ্গেল। ডাবল না হতে পারার একটা কারণ বোধ করি অতি দ্রুত হাঁটা যা বেশিরভাগ মেয়েকে পিছিয়ে পড়তে বাধ্য করে। কিন্তু শুধু না পারার সাম্যাবস্থা নয় আমার সাথে যাবতীয় ডাবল জিনিসের শত্রুতা। তাই দ্বিচক্রযান বা ইঞ্জিনচালিত দ্বিচক্রযান কোনটাই ঠিক আমার সাথে মানানসই নয়। কিন্তু ধনবাড়ী কলেজিয়েট স্কুল ছাত্র ফোরামের প্রথম স্যুভিনীর করার কাজে আমাকে মোটর বাইকে বেশিরভাগ সময় সুমন ভাইয়ের পিছনে দ্বিতীয় আরোহী হয়ে ঘুরতে হয়েছে।  আমার স্পষ্ট মনে আছে যেদিন এনটিভি অফিস থেকে ফোরামের প্রায় ৬০০ ফরম নিয়ে যাচ্ছিলাম প্রেসে সেদিন বেইলী রোডের সিনেম্যাটিক অ্যাক্সিডেন্টের কথা। প্রাইভেট কারের সাথে সুমন ভাইয়ের মোটর বাইকের সংঘর্ষের পর তেমন একটা আহত না হলেও পিছন থেকে উড়ে গিয়ে এক ডিগবাজি খেলাম। সুমন ভাইয়ের পা ছড়ে গেল। আমার কনুইয়ের রক্তে ফরমগুলো হালকা রঙ্গিন হল। পরবর্তীতে সে অবস্থায়ই ফরমগুলোকে প্রেসে নেওয়া হল। সেটিই ছিল আমার প্রথম আর সুমন ভাইয়ের দ্বিতীয় বাইক অ্যাক্সিডেন্ট। আবার একদিন রাত সাড়ে বারোটায় প্রেস থেকে বেরিয়ে সোলায়মান ভাইয়ের মোটর বাইকে চড়ে শাহবাগ পৌঁছেছি।

ঢাকা থেকে এলাকায় গিয়ে ব্যাচ প্রতিনিধির দায়িত্বে হাত দিলাম। আমার অবশ্য বেশ সুবিধা ছিল কারণ আমার সহকর্মী হিসেবে পেয়েছিলাম সহপাঠী সর্বোচ্চ সক্রিয় সুজনকে। অপু ভাইয়ের মোটর বাইকে প্রতিদিন সকালে তেল তুলে সুজনের পিছনের সিটে বসে সহপাঠীদের বাড়ীতে গিয়ে তাদেরকে রেজিস্ট্রেশন করানো শুরু করলাম। এ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বিশাল বিচিত্রএ সময় আমার নিজেকে আর্নেস্টো গুয়েভারা দে লা সেরনা মনে হচ্ছিল। ১৯৫২ সালে ডাক্তারি পড়ার শেষদিকে ২৩ বছরের এই ছেলেটি যেরকম ল্যাটিন আমেরিকার ৮,০০০ কিলোমিটার রাস্তা ৪ মাসে ঘুরেছিল তার বন্ধু ২৯ বছর বয়সী আলবার্তো গ্রানাদোর সাথে ‘পদেরসা’ নামক একটি নর্টন ৫০০ মোটর বাইকে ঠিক তেমনি আমিও সুজনের সাথে প্রতিদিন প্রায় ৮০ কিলোমিটার ধনবাড়ীর এমাথা থেকে ওমাথায় ঘুরেছি চরকির মত। অনেক দিন মধ্যাহ্নভোজ মিস হলেও বিশেষত বান্ধবীদের বাড়িতে গিয়ে যে স্ন্যাকস খেয়েছি তাতে খুব একটা ক্ষতি হয়নি। যাহোক আর্নেস্টোর ওই ভ্রমণের সময় দেখা ল্যাটিন আমেরিকার কুৎসিত দারিদ্র্যের বাস্তব চিত্রই তাকে পুরো পৃথিবীর কাছে বিপ্লবী চে হয়ে উঠতে সাহায্য করেছিল আর আমার ভ্রমণ আমার দৃষ্টিভঙ্গিকে করেছে প্রসারিত। উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রে আধা কৃষিজীবী পরিবারে মানুষ হয়ে আমি জীবনকে যেভাবে দেখতে অভ্যস্ত ছিলাম তার অবসান হয়েছিল এর ফলে। আমি এসময় ধনবাড়ীর প্রান্তিক অঞ্চলের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনযাপন দেখার সৌভাগ্য অর্জন করেছি যা সদরে থাকার কারণে সব হাতের কাছে পাওয়ায় সম্ভব হয়নিএছাড়াও এলাকার বিভিন্ন গলি ঘুপচি ও ভৌগলিক সীমারেখার কিছুটা চেনা হয়েছে এর ফলে। আর যে সহপাঠীদের আমি স্কুলে একরকম দেখতাম পারিবারিক বলয়ে তাদের এক সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র আমাকে স্তম্ভিত করেছে। শেষমেষ এই সিদ্ধান্তই আরো পাকাপোক্ত হল যে আমরা সবাই অর্থনীতির পুতুল।

স্কুল জীবনের আমার এত এত স্মৃতি থেকে বাছাই করা কয়েকটির যে সারমর্ম জমা দিয়েছিলাম তা সমকালীন আধুনিকায়নের মত সংক্ষিপ্ত করতে বলা হয়েছিল। যদিও লেখাটি শেষপর্যন্ত বিনা কর্তনেই ছাড়পত্র পেয়েছিল। তবু আরেকবার যদি সারাংশ দাঁড় করাই তবে সহপাঠী আকাশের সাথে হাতাহাতির পর তাকে ঢিলে পরাস্ত পালানোর মাধ্যমে যে স্কুল জীবনের শুরু তা পুনর্জন্মের পর ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে প্রথমবার কুরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতায় স্কুলমঞ্চে কম্পিত হাঁটুতে উঠায় গিয়ে ঠেকেএরপর প্রথমবারের মত কুসুম কুসুম ভালবাসার অনুভূতির সূত্রপাতের স্মৃতি, ৮ম শ্রেণীর শেষদিকে অনানুষ্ঠানিকভাবে ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়া (তবে পৃথিবী কোন অনাগত পেস নক্ষত্রকে হারিয়েছিল কিনা বলতে পারব না!), ৮ম শ্রেণী থেকে শ্রেণীভিত্তিক দেয়ালিকার প্রতিটিতে লেখক থাকলেও কোনটিতে সম্পাদক না হতে পারার অপূর্ণতা, ১০ম শ্রেণীর ১ম সাময়িক পরীক্ষায় অর্থাৎ প্রাথমিক স্তরের ন্যায় মাধ্যমিক স্তরের মোট নাম্বারের ভিত্তিতে ক্রম নির্ণায়ক শেষ পরীক্ষায় গণিতে সর্বোচ্চ নাম্বার ৭৬ পাওয়ার সুবাদে প্রথম হওয়া (পার্থক্য সৃষ্টিকারী গণিতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নাম্বার ৫৯ পেয়েছিল শাহীন) ইত্যাদি সময়ানুগ বিবর্তনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
আমি বন্দুকধারী মানুষদের বরাবরই ঘৃণা করি। আর এদের মধ্যে বেশি ঘৃণিত পুলিশদের জাতীয় পোশাক খাঁকি। কিন্তু দিন মাস বছরের হিসাবে অনেক আগে এ স্কুল ছাড়লেও প্রবলভাবে এখনও মিস করি এখানকার খাঁকি-সাদাকে।

‘শিশু কানন’-এর এক চারা শিমুল

আষ্টাদশ শতকের শেষের দিকে নতুন একশিক্ষাচিন্তার ভিত্তিতে জার্মানির বাভারিয়া ও স্ট্রাসবর্গে দুটি বিদ্যায়তনপ্রতিষ্ঠিত হয়। এ শিক্ষাচিন্তার রূপকার ছিলেন Friedrich Fröbel(1782-1852) নামক একজন জার্মান শিক্ষাবিদ। আর এই যুগান্তকারীশিক্ষাচিন্তাটি হল ‘কিন্ডার গার্টেন’ বা কে জি। জার্মান ভাষায় Kinder শব্দটির অর্থ শিশু আর Garten অর্থ বাগান মানেকিন্ডার গার্টেন অর্থ শিশুদের বাগান বা শিশু কানন। যেহেতু বর্তমানে পৃথিবীটা একটি‘বৈশ্বিক গ্রাম’ তাই জার্মানি থেকে শুরু হওয়া তত্ত্বের প্রয়োগে এশিয়ার একটি দরিদ্রদেশ বাংলাদেশের টাংগাইল জেলার ধনবাড়ী উপজেলায়ও (তখন উপজেলা ছিল না) একটি বিদ্যালয়প্রতিষ্ঠিত হয় যার নাম ‘শিশু কানন’। আর এই কানন তথা স্কুলে চারা হিসেবে আমারঅঙ্কুরোদগম হয় ২০০০ সালে ৩য় শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার মাধ্যমে। জার্মানির প্রক্রিয়াপাসপোর্ট-ভিসা ছাড়াই সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবাসী হয়েছিল বলেই হয়তোঅপরাধের শাস্তিস্বরূপ এই প্রক্রিয়ার শিক্ষার্থীদের প্রায়শ্চিত্ত করতে সরকারিস্কুলে ভর্তি হয়ে পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হত। বলাই বাহুল্য আমিও সেই পাপখন্ডনের জন্য অগ্রজ কাকাতো বোন রিংকি আপার পদাঙ্ক ধরে বরমপুর স্কুলে ভর্তি ছিলামআর ওখান থেকেই প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি। স্কুলের নামটা যদি ভুল হয়তবে আমি দুঃখিত কারণ কাগজে-কলমে আমি ওখানকার ছাত্র হলেও কোনদিন ওই স্কুল-আঙ্গিনানিজ চোখে দেখিনি। যাহোক কলেজিয়েট প্রাইমারী স্কুলের ২য় শ্রেণী পাস করে যখন আমাররোল নং ৪ থেকে অবনতি হয়ে হয়েছিল ১০ তখনই খাঁকি প্যান্ট ছেড়ে আমি এখানকার মেরুনপ্যান্ট যখন পরা শুরু করলাম। হয়তো ডাক্তারি আবহের পরিবারের ছেলে হিসেবে আমার এইহাওয়া বদল করতে হয়েছিল। তবে নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে গিয়ে নতুন বন্ধু হিসেবেপেলাম সুমন, শুভ আর নেপালকে আর পরে বান্ধবী হিসেবে পেয়েছিলাম ফার্স্ট গার্ল মুক্তা,কণিকা, লিমা, ডলিও দোলাকে। নতুন শুরু হওয়া স্কুল হিসেবে এখানকার ছাত্র সংখ্যা ছিল অনেক কম তাইচাহিদার সংখ্যারেখা অনুসারে সুবিধা ছিল জন প্রতি অনেক বেশি। তাই বস্তুগত খেলারসাথী হিসেবে ছিল একটা হ্যান্ডবল। যাকে আমি সৃজনশীলভাবে ফুটবলে রূপান্তরিত করে খালিমাঠে একা একা খেলা করতাম। কে জানে আমার প্রতিযোগিতার প্রতি বিরূপ মনোভাব ও ‘একলাচলো রে’ নীতির প্রতি শ্রদ্ধাবোধের একটা অবচেতন বহিঃপ্রকাশ হয়তো ছিল ওটা! এখানেআমার ক্রীড়া প্রতিযোগিতার দক্ষতা চরম পর্যায়ে ছিল তার একটা কারণ অবশ্য অবশ্যইপ্রতিযোগীর স্বল্পতা!
এখানে পড়ার সময় আমি ৩য় শ্রেণীতে জেলাপর্যায়ের বেসরকারি বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি এবং ব্যর্থ হই। পরের বছরব্যর্থতাকে পরাজিত করে ৪র্থ শ্রেণীতে রাব্বানি স্মৃতি উপবৃত্তি লাভ করি। আর ৫মশ্রেণীতে মেধাতালিকায় সরকারি বৃত্তি লাভ করি। এই যে সফলতা তা ৪র্থ শ্রেণী পর্যন্তছিল আমার বাবার তত্ত্বাবধান ও শিক্ষকদের শ্রেণী পাঠের ফসল আর ৫ম শ্রেণীতে এর সাথেযোগ হয়েছিল ছাত্রসখা বৃত্তি গাইডের সহায়তা। যা বর্তমান প্রজন্মের গাইড বই ওপ্রাইভেট-কোচিং নির্ভর ব্রয়লার মুরগীর মত সর্বোচ্চ ফলাফলকারী ছাত্র-ছাত্রীদের কাছেরূপকথার গল্পের মত মনে হলেও কিছু করার নেই।
এখানে যাদেরকে শিক্ষক হিসেবে পেয়ে আমি ভাগ্যবান তারা হলেন গফুরস্যার, কুদ্দুস স্যার,সুশীল স্যার, লিটন স্যার, আমার প্রিয় মনোরঞ্জন স্যার, সুমনা ম্যাম, বিউটি ম্যাম প্রমুখ।
সহ-শিক্ষাক্রমিক যে কাজগুলো করতাম তারএকটি হল টিফিন পিরিয়ডে গাছের মরা ডালকে বন্দুক বানিয়ে মাঠে ক্রলিং করে মুক্তিযোদ্ধাহয়ে শত্রু শত্রু খেলা। পরে শুনেছি আমার এ কাজ নাকি সাকিনা মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষিকাকে চমৎকৃত করেছিল। এখানেই আমি পি টি ক্লাসেলাইনের শেষে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় জনৈক শিক্ষকের কাছ থেকে আমার গানেরগলার প্রশংসা পাই। ফলে ৫ম শ্রেণীতে আবেগের আতিশয্যে জীবনে প্রথম মুখস্থ করাতৎকালীন জনপ্রিয় সিনেমা ‘হঠাৎ বৃষ্টি’-তে নচিকেতার গাওয়া ‘সোনালী প্রান্তরে...’গানটি বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গাওয়ার প্রস্তুতি নেই। কিন্তু শিশু কাননযেহেতু একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের মত ছিল তাই গার্লস স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠানে শেষপর্যন্ত আমি সুযোগ পাইনি। এ স্কুলে পড়ার সময় আমার একটি গুণ খুবই সমাদৃত হয়েছিল আরতা হল আমি ঘাস, লতা, পাতা ও নারিকেল গাছের পাতার জালিকা অংশ দিয়ে ভালো পাখির বাসাবানাতে পারতাম যা অবিকল আসল পাখির বাসার মতই হতো। কয়েকজনকে ওগুলো বানিয়ে উপহারওদিতাম।
শিশু কানন আমার আত্মবিকাশ ঘটিয়েছিল।মুখচোরা আমিই সক্রেটিসের Know thyself এর রাজপথ ধরে হাঁটতে শুরু করেছিলাম এসময় থেকে। কলেজিয়েট স্কুল থেকে যে ছেলেটি ১০ম স্থানঅধিকার করে এখানে ভর্তি হয়েছিল সে ৫ম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারকরে আবার পুরোনো ঠিকানার মাধ্যমিক ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ১ম স্থান ছিনিয়ে নিয়েছিল।তার পরের ইতিহাস অবশ্য অন্য এক রাজ্যের গল্প।