শিরোনামটি প্রয়াত লেখক হুমায়ূন আহমেদ-এর স্মরণে ইচ্ছাকৃত ভুল। কেননা আমাদের
গন্তব্য ছিল ঢাকা থেকে দারুচিনি দ্বীপের বিপরীত দিকে অবস্থিত সিলেট বিভাগ।
যদিও নামকরণের সপক্ষে দুটি যুক্তি আমি খাড়া করতে পারব। প্রথমত হুমায়ূন
কাকার বইতে আমরা যে মধ্যবিত্তের টানাপোড়ন দেখি তার ১৬ আনা বজায় ছিল আমাদের
শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রস্তুতিতে। দ্বিতীয়ত দারুচিনি
দ্বীপের শ্যুটিং স্পটের নাম সেন্ট মার্টিন নামের এক ক্রিশ্চিয়ান সন্তের
নামে রাখা। আর আমরা যেখানে যাচ্ছিলাম তার পূর্বনাম জালালাবাদ যা সুফি দরবেশ
শাহ জালালের নামে রাখা। আমরা বলতে আমি, আঁখি, ইলিয়াস, জাকিয়া, জসীম,
তন্বী, মাসুম ও রাহুল অর্থাৎ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা
ইনস্টিটিউটের ১৭তম ব্যাচের ভাষাশিক্ষা বিভাগের কয়েকজন প্রাণী। নারীবাদীরা
আবার বাঁকা চোখে তাকাবেন না কারণ আমাদের ইচ্ছা ছিল সমতার। কিন্তু বিধি বাম।
ও এই ফাঁকে ১৭তম ব্যাচ সম্পর্কেও কিছু বলে নেই। এটিই সমন্বিত পরীক্ষার
মাধ্যমে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের প্রথম ব্যাচ। তাই একটু সমন্বয়হীনতা একটু বেশি
থাকবে তা বিজ্ঞজনমাত্র অবশ্যই বুঝতে পারছেন। তবে আমাদের ব্যাচের অসুবিধা
কিংবদন্তীতুল্য তাই ওদিকে আর যাচ্ছি না। তবে এ ভ্রমণটি আশা করি অনেক
ব্যর্থতার মাঝে অবশ্যই অন্তত একটি সফলতার আঁচড়।
শুরু থেকেই শুরু করছি। প্রচন্ড ব্যস্ততার মাঝেই নেক্সাসের ম্যানেজারির পুরো ভার জাহিদের উপর দিয়ে আমি হল থেকে বের হলাম ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে। যদিও কথা ছিল সবাই ২টার মাঝে উপস্থিত হবে। কিন্তু আমি দেড়টা থেকে আই ই আর ক্যান্টিনে বসে আঙ্গুল চুষছিলাম আর সমন্বয়কারী রাহুলের উপর ফোনে ঝাল ঝাড়ছিলাম। অবশেষে আড়াইটার দিকে রাহুল এল। এরপর একে একে ইলিয়াস, মাসুম-জসীম এবং Ladies first-এ বাক্যকে মিথ্যা প্রমাণ করে ৩ কন্যা এল সবশেষে। জসীমের ইচ্ছা ছিল আমরা লাল বাসে কমলাপুর যাবো। কিন্তু সময়ের হের ফেরে রিক্সা যোগে কমলাপুর গেলাম একদম ট্রেন ছাড়ার সময়ে। ৪টা ১মিনিটে ট্রেন ছাড়ল। ট্রেনে উঠেই শুরু হলো আমার সহযাত্রী কর্ণের তাস খেলার তীব্র তৃষ্ণা। ও বলতে ভুলে গেছি পিটার ব্রুকের মহাভারতের কর্ণ চরিত্রের মত দাড়ি নিয়ে আসায় জসীমের নাম দিয়েছিলাম কর্ণ। ট্রেনে আমরা জামাতের সহিত ঘুমের অভিনয়ের পারদর্শিতা দেখালাম যখন একদল হিজড়া টাকা তুলতে তুলতে আমাদের দিকে আসছিল। পুরো ট্রেন ভ্রমণে আমরা খুব ক্ষুধার্ত ছিলাম কিন্তু তা ঠিকভাবে নিবারণ না হলেও শেষদিকে আত্মিক ক্ষুধা মিটল এক বেহালাওয়ালা পল্লীগীতি গায়কের গানে গলা মিলিয়ে। বেশিরভাগ জায়গার মত এখানেও একজন বলল যে আমার সহযাত্রীরা আমার তুলনায় বয়সে বড়! শেষদিকে সুপারভাইজার আমাদের বান্ধবীদের সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণ করে ঝাড়ি খেল।
সিলেট স্টেশনে নেমেই কুলাউড়ার টিকেটে সিলেট আসার দায়ে রাত সাড়ে ১১টায় ৩০০ টাকা গচ্চা দিতে হল। এরপর দুটো সি এন জিতে উঠে সুরমা নদী পার হয়ে কিন ব্রীজ দিয়ে তালতলা দিলশাদ হলের বিপরীতে হোটেল গ্রীন গার্ডেনে উঠলাম। ৩ তলার ৩০১, ৩০২ ও ৩০৩ এই ৩টি রুম ভাড়া নিলাম। ৫ ভাই রেস্তোরাতে রাতের খাবার খেয়ে আমার মাথা গোঁজার ঠাঁই হলো ৩০৩-এ রাহুলের সাথে। রুমটা ভালই বড়। কিন্তু ঢোকার পরই বাথরুমের বাতি কেটে গেল। আর এটি সম্ভবত পর্দাপ্রথায় বিশ্বাসী না কারণ জানালার পর্দা ধরে টান দিতেই তা খুলে গেল। রুমের সাথে ফ্রি ছিল এক টুকরো ঝুলবারান্দা। কিন্তু এখানে দাঁড়ালেই সামনের হোটেল সুফিয়ার দেয়ালে লাগানো শাকিব খানের পাওয়ার ড্রিংক্সের বিজ্ঞাপন আমার কাছে ততটা স্বস্তিদায়ক ছিল না। ৩০২ আমাদের মহিলা হোস্টেল। তবে বাথরুমের বাজে অবস্থা ও হাই কমোডের জন্য কয়েকজনকে কাঁটাতার ক্রস করে পাশের রাজ্যে ঢুকতে হল। কারণ এই একটা জিনিস যার সাথে কোন কম্প্রোমাইজ চলে না। রাতে মাসুম তার নামের সার্থকতার প্রমাণ দিল জাকিয়াকে দেখে ভয় পাওয়ার মাধ্যমে। আর মেয়েরাও আমাদেরকে ভয় দেখাতে লাগল নিজেদের দরজায় নক করে মিথ্যা বলার মাধ্যমে। তবে ভয় নয় রাত ২টায় জাকিয়ার পশ্চিম কোন দিকে এ প্রশ্ন শুনে অবাক হয়ে শুতে গেলাম। অনেক দিন পর হলের সিংগেল বেডে ডাবল হয়ে শোয়ার ব্যতিক্রম ঘটল।মহিলা হোস্টেলে সিংগেল বেডে ২জন আর ডাবল বেডে একজনের শোয়ার বন্দোবস্ত কেন হল তা জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন হতেই পারে। এর উত্তর অবশ্য পরে আপনা আপনিই বেরিয়ে গেল যখন ডাবল বেডের একমাত্র শয়নকারী লোক জাকিয়া সিঙ্গেল বেডে পরীক্ষামূলক শয়ন করতে গিয়ে বেডটা ভেঙ্গেই ফেলল।
দ্বিতীয় দিনটা শুরু হলো একটু অপরিকল্পনার মাধ্যমে। কারণ ৮ টায় বের হওয়ার কথা থাকলেও নাস্তা করতে দেরি হলো। নাস্তা আসার ফাঁকে জসীম পূর্বজন্মের কথা স্মরণ করেই কিনা জানি না তার নখে নেইল পলিশ লাগালো। অবশেষে ১০টা ৩০-এ অন্যভাবে যাওয়ার চিন্তা বাদ দিয়ে উঠলাম আমাদের এ যুগের পেগাসাসে অর্থাৎ মাইক্রোবাসে। আমাদের সারথি হলেন মানসুর ভাই। কামারুল নামের সিলেট নিবাসী আমাদের এক বন্ধুরো ডাকনাম মনসুর তাই সে না থেকেও আমাদের সাথেই থাকল। ক্লাসের মত আমার স্থান হল ব্যাক বেঞ্চে। আমার সাথে আর দুই অভাগা জসীম ও মাসুম।
প্রথমে গেলাম জাফলং-এর খালাতো ভাই বিছানাকান্দিতে। পথে তন্বী যাত্রাজনিত ধকলে অসুস্থ হয়ে পড়ল। গাড়ী থেকে নেমে হাঁটলাম কিছুক্ষণ। তারপর ভটভটি ভ্রমণ মানে ইঞ্জিন চালিত নৌকা করে গেলাম মূল জায়গায়। আমাদের সার সাগরের মাঝি ছিল একটি বাচ্চা ছেলে যাকে যাত্রা শেষে বকশিশ দিল মাসুম। এটিই বাংলাদেশের শেষ সীমানা। তাই ভারতের পাহাড়গুলোর হাতছানিতে সীমানা পেরিয়ে এক পা যাওয়ার লোভ সামলাতে পারলাম না। ফলাফল আমার পায়ের বৃদ্ধাংগুল রক্তাক্ত। এরপর সারি-গুয়াইন ঘাটে চলল যুগপৎ ইনপুট ও আউটপুট।
পরবর্তী গন্তব্য লালখাল। নামে লাল হলেও খালটির পানি নীল। কিন্তু আমাদের মুখগুলো খাল দেখে লাল হয়ে গেল। কারণ এখানে রিভার কুইন হোটেল আমাদের জন্য নয় আর খালটি তেমন অসাধারণ নয়। তবে যাত্রাপথে ইলিয়াসের ভুঁড়ি নিয়ে আলোচনা, খুলনা ও কুমিল্লার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই আর জসীমের মানিব্যাগ হাসির ফুলঝুরি ছুটিয়েছিল।
এরপর গেলাম সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুল। নেমেই কাঁচারাস্তার ভরতনাট্যম প্রভাব কাটাতে চলল চা চক্র। সময়টা সন্ধ্যা ছিল বলে নৌকা নিয়ে মূল জায়গায় যাওয়া হল না। তাই অ্যাডভান্স টিম হিসেবে আমি আর জসীম গিয়ে এর একটা প্রতিবেদনের দায়িত্ব পেলাম। তবে আমাদের অনুগমন করল মি ও মিসেস সাহা। সময় বাড়ার সাথে সাথে তন্বীর অসুস্থতা বেড়েই চলছিল। তার মধ্যে মড়ার উপর খড়ার ঘা হিসেবে ইলিয়াস তন্বীর হাতের ওপর বসে পড়ল। ইলিয়াসের ওজন সম্পর্কে যাদের ন্যুনতম ধারণা আছে তাদের আশা করি আর কিছু না বললেও চলবে।
২৮ তারখের অভিযান শুরু করেছিলাম ৮জন আর শেষ করে হোটেলে থাকলাম ৭জন। ইলিয়াসকে চলে যেতে হল অনিবার্য কারণবশত। ব্যয় সংকোচনের জন্য ৩০৩নং রুমকে বিদায় জানালাম। অনেক কষ্টে মেয়েদেরকে যখন রাতের খাবার খেতে বাইরে নিয়ে যাবো তখন জসীম তালা খুলে কোথায় রেখেছে তা কোনক্রমেই মনে করতে পারল না। তালা কেলেংকারী ঘুচাতে পুরো রুমে চিরুনী অভিযান চালিয়েও যখন তালা পাওয়া যাচ্ছিল না তখন জাকিয়া দরজার পিছন থেকে তালা বের করল যেখানে এর আগে জসীম ২ বার খুঁজেছিল। ৫ ভাই-এ গিয়ে জীবনে প্রথমবারের মত আস্ত কোয়েল পাখি দিয়ে রাতের ভোজ শেষ করলাম। রাতে জীবনে প্রথমবারের মত বিল্বফল খেতে খেতে মহিলা হোস্টেলে গিয়ে মাসুম বাদে সবাই চ্যাম্পিয়ন ও কল ব্রিজ খেললাম। জসীম ও তন্বীর বাদানুবাদে যখন খেলা পন্ড হল তখন ঘড়িতে দেড়টা বাজে।
২৮ তারিখের ভুল পরের সকালে আর করলাম না। আজকের দিনটা শুরু হল রুমমেট মাসুম ও জসীমের ম্যাজিক শোর শব্দে। আরেকটি শো হল আজ যেখানে পারফর্মার রাহুল আর একমাত্র দর্শক জসীম। শো শেষে গ্রিন গার্ডেনকে বিদায় জানিয়ে বের হলাম ৮টায়। আজ প্রমোশন পেয়ে বাসের ১ম সিটে বসলাম।
আজ দিনটা শুরু করলাম ধর্মীয় দরগাহ দিয়ে অর্থাৎ শাহ জালালের মাজার দিয়ে। যাওয়ার সাথে সাথে জসীমকে জালালী কবুতরগুলো বর্জ্যপাত দ্বারা অভ্যর্থনা জানাল। অপমানের এই শেষ নয়, মাছগুলোও তার দেওয়া খাবার খেল না। এদেশ যে জ্ঞান বিজ্ঞানে এগিয়ে যাচ্ছে তা আর বুঝতে বাকী থাকল না। আমার এক সময়ের আইকন সালমান শাহের কবরও দেখলাম এখানে।
এরপর আইডি কার্ড জমা দিয়ে ঢুকলাম শাহ জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখানকার জালালীয় এলাকায় জসীম ভাল সম্মান পেল, তাকে একজন মনে করল সে ঢাবির শিক্ষক। এখানকার টিলা আমাদের বেশ ভাল সময় উপহার দিল। ফেরার পথে হাসন রাজা ও শাহ আব্দুল করিম কে নিয়ে ড্রাইভার মনসুর ভাই একটি নাতিদীর্ঘ বক্তৃতা দিলেন।
কুশিয়ারা পার হয়ে এবারে গেলাম গ্র্যান্ড সুলতান হোটেলে। রাজকীয় কায়দায় সম্ভাষণ পেলেও একে আমার সাদ্দাদের বেহেশতের চেয়ে বেশি কিছু মনে হয় নি। এই কৃত্রিম কংক্রিটের কারাগারে বসে রেগুলার চা খেলাম প্রতি কাপ ১১৭ টাকা করে। এখানে আসতে আসতেই জসীমের নাম বিবর্তিত হয়ে হল শ্রী দিগম্বুরা।
নুর হোটেলে মনসুর ভাইয়ের সাথে লাস্ট লাঞ্চ করলাম।
পরবর্তীতে লাউয়াছড়া উদ্যানে ঘুরলাম। এটি একটি অভয়ারণ্য হলেও সময় কম বলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের সাথে দেখা আর ৭ স্তরের চা খাওয়া হল না।
পিক আপে ফেরার পথে চা বাগানে নামলাম। কারণ চা ছাড়া সিলেট সম্পূর্ণ না। এটি ছিল তন্বির প্রথম পিক আপ ভ্রমণ। ও কিছু চা ফুল আনল যার সুবাস ছিল অনন্য।
শ্রীমঙ্গল রেল স্টেশনে ঘটল অমঙ্গল। এখানে পা দিলাম, এক হেলেনকে দেখলাম আর প্রেমে পড়লাম। সিলেট দুর্বোদ্ধ ভাষার কম ঘনবসতিপূর্ণ গোঁড়া এলাকা হলেও সিলেট ছাড়ার শেষ দিকে এ আমার চোখ জুড়িয়ে দিল। সাহসী হয়ে চা ফুল নিয়ে তাকে প্রেম নিবেদন করতে গিয়ে দেখি সে তার মার সাথে রিক্সায় চলে যাচ্ছে। সবার অলক্ষে কয়েকটা চোখাচোখির পর একটা ধ্রুপদী ট্র্যাজেডি ঘটে গেল। তবে মাথায় একটা কবিতার আইডিয়া জন্ম নিল। কোনদিন হয়তো তা খুলির দেয়াল ভেদ করে বৃষ্টির মত কলমের নিবে এসে সাদা কাগুজে জমিন উর্বর করবে।
ওয়েটিং রুমে বসে থাকতে থাকতে সাতকড়া কিনতে বের হলাম। জসীমের নামটার আরেকটি সংস্করন বের হলো জিসম। এখানে সন্ধ্যায় শুয়ে মাসুম গগলস দিয়ে সূর্য দেখতে লাগল। আরেক দফায় জাকিয়াকে নিয়ে কফি ও চায়ে চুমুক দিতে দিতে গল্প করলাম। এসে দেখি ওয়েটিং রুমের পাগল-ছাগল আর মাদকাসক্তরা আমাদের বান্ধবীদের উত্যক্ত করেছে। ফলে আমরা হলাম উত্তপ্ত। জেন্ডার ইডুকেশন পড়ার আগে থেকেই আমি নারীদের মানুষ মনে করি বলে এমন এক কথা বললাম যা পরিস্থিতিকে আমাদের প্রতিকূল করে তুলল। স্থানীয়দের সাথে বিবাদের ফলে আমদের জীবন সংশয় তৈরি হল। সারা সময় আমি আর জসীম হেঁটে সবার আগে চলে আসলেও এই পরিস্থিতি পড়ে মেয়েরাও ভারী ব্যাগগুলো নিয়ে অনায়াসে প্রায় দৌড়াতে লাগল।
অবশেষে হানিফ বাস কাউন্টারে পৌঁছে সাড়ে ১২টার বাসের টিকেট কাটলাম। ভাগ্যিস নেক্সাসের টাকাগুলো পকেটে ছিল। ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা সময়টুকু চরম উৎকন্ঠায় কাটছিল সবার। এর মাঝে রাতের খাবারের পালা এল। আমি অতিরিক্ত চা গেলায় খাব না বলে আমার উপর দায়িত্ব পড়ল মাল-সামানা দেখাশোনার। একা অপরিচিত প্রতিকূল পরিবেশে বসে আমার অবস্থা খুব সুখকর অবশ্যই ছিল না। শেষ পর্যন্ত ভালয় ভালয় বাসে উঠলাম ও ভোর সাড়ে ৪টায় রূপসী বাংলা হোটেলের সামনে নামলাম। এরপর শামসুন্নাহার হলের সামনে বসে চলল খরচের হিসাব, পুনঃপর্যালোচনা ও বিষোদগার। তবে ব্যর্থতা-সফলতায় শেষদিনটি ছিল পুরোপুরি মাসুমময়।
এই কয়দিন আমি সময়যন্ত্রের সাথে দৌড় প্রতিযোগিতায় নেমেছিলাম। আর ভ্রমণ শেষে এত স্মৃতি জমল যে মনে হল কেটে গেছে কয়েক শত বছর। তাহলে পাঠক বুঝে নিন এই অসম প্রতিযোগিতার পুরষ্কার শেষ পর্যন্ত কার হাতে উঠল। wink emoticon
এই ভ্রমণের অস্থির ছবিগুলো দেখতে পাবেন https://www.facebook.com/media/set/… ঠিকানায়। আর ছবিগুলোর জন্য রুমমেট ছোট ভাই Juwel Hassan -এর অবশ্যই আমার কাছ থেকে একটা বিশেষ ধন্যবাদ পাওনা কারণ আমার হাতের ক্যামেরাখানা তো তারই ছিল।
শুরু থেকেই শুরু করছি। প্রচন্ড ব্যস্ততার মাঝেই নেক্সাসের ম্যানেজারির পুরো ভার জাহিদের উপর দিয়ে আমি হল থেকে বের হলাম ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে। যদিও কথা ছিল সবাই ২টার মাঝে উপস্থিত হবে। কিন্তু আমি দেড়টা থেকে আই ই আর ক্যান্টিনে বসে আঙ্গুল চুষছিলাম আর সমন্বয়কারী রাহুলের উপর ফোনে ঝাল ঝাড়ছিলাম। অবশেষে আড়াইটার দিকে রাহুল এল। এরপর একে একে ইলিয়াস, মাসুম-জসীম এবং Ladies first-এ বাক্যকে মিথ্যা প্রমাণ করে ৩ কন্যা এল সবশেষে। জসীমের ইচ্ছা ছিল আমরা লাল বাসে কমলাপুর যাবো। কিন্তু সময়ের হের ফেরে রিক্সা যোগে কমলাপুর গেলাম একদম ট্রেন ছাড়ার সময়ে। ৪টা ১মিনিটে ট্রেন ছাড়ল। ট্রেনে উঠেই শুরু হলো আমার সহযাত্রী কর্ণের তাস খেলার তীব্র তৃষ্ণা। ও বলতে ভুলে গেছি পিটার ব্রুকের মহাভারতের কর্ণ চরিত্রের মত দাড়ি নিয়ে আসায় জসীমের নাম দিয়েছিলাম কর্ণ। ট্রেনে আমরা জামাতের সহিত ঘুমের অভিনয়ের পারদর্শিতা দেখালাম যখন একদল হিজড়া টাকা তুলতে তুলতে আমাদের দিকে আসছিল। পুরো ট্রেন ভ্রমণে আমরা খুব ক্ষুধার্ত ছিলাম কিন্তু তা ঠিকভাবে নিবারণ না হলেও শেষদিকে আত্মিক ক্ষুধা মিটল এক বেহালাওয়ালা পল্লীগীতি গায়কের গানে গলা মিলিয়ে। বেশিরভাগ জায়গার মত এখানেও একজন বলল যে আমার সহযাত্রীরা আমার তুলনায় বয়সে বড়! শেষদিকে সুপারভাইজার আমাদের বান্ধবীদের সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণ করে ঝাড়ি খেল।
সিলেট স্টেশনে নেমেই কুলাউড়ার টিকেটে সিলেট আসার দায়ে রাত সাড়ে ১১টায় ৩০০ টাকা গচ্চা দিতে হল। এরপর দুটো সি এন জিতে উঠে সুরমা নদী পার হয়ে কিন ব্রীজ দিয়ে তালতলা দিলশাদ হলের বিপরীতে হোটেল গ্রীন গার্ডেনে উঠলাম। ৩ তলার ৩০১, ৩০২ ও ৩০৩ এই ৩টি রুম ভাড়া নিলাম। ৫ ভাই রেস্তোরাতে রাতের খাবার খেয়ে আমার মাথা গোঁজার ঠাঁই হলো ৩০৩-এ রাহুলের সাথে। রুমটা ভালই বড়। কিন্তু ঢোকার পরই বাথরুমের বাতি কেটে গেল। আর এটি সম্ভবত পর্দাপ্রথায় বিশ্বাসী না কারণ জানালার পর্দা ধরে টান দিতেই তা খুলে গেল। রুমের সাথে ফ্রি ছিল এক টুকরো ঝুলবারান্দা। কিন্তু এখানে দাঁড়ালেই সামনের হোটেল সুফিয়ার দেয়ালে লাগানো শাকিব খানের পাওয়ার ড্রিংক্সের বিজ্ঞাপন আমার কাছে ততটা স্বস্তিদায়ক ছিল না। ৩০২ আমাদের মহিলা হোস্টেল। তবে বাথরুমের বাজে অবস্থা ও হাই কমোডের জন্য কয়েকজনকে কাঁটাতার ক্রস করে পাশের রাজ্যে ঢুকতে হল। কারণ এই একটা জিনিস যার সাথে কোন কম্প্রোমাইজ চলে না। রাতে মাসুম তার নামের সার্থকতার প্রমাণ দিল জাকিয়াকে দেখে ভয় পাওয়ার মাধ্যমে। আর মেয়েরাও আমাদেরকে ভয় দেখাতে লাগল নিজেদের দরজায় নক করে মিথ্যা বলার মাধ্যমে। তবে ভয় নয় রাত ২টায় জাকিয়ার পশ্চিম কোন দিকে এ প্রশ্ন শুনে অবাক হয়ে শুতে গেলাম। অনেক দিন পর হলের সিংগেল বেডে ডাবল হয়ে শোয়ার ব্যতিক্রম ঘটল।মহিলা হোস্টেলে সিংগেল বেডে ২জন আর ডাবল বেডে একজনের শোয়ার বন্দোবস্ত কেন হল তা জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন হতেই পারে। এর উত্তর অবশ্য পরে আপনা আপনিই বেরিয়ে গেল যখন ডাবল বেডের একমাত্র শয়নকারী লোক জাকিয়া সিঙ্গেল বেডে পরীক্ষামূলক শয়ন করতে গিয়ে বেডটা ভেঙ্গেই ফেলল।
দ্বিতীয় দিনটা শুরু হলো একটু অপরিকল্পনার মাধ্যমে। কারণ ৮ টায় বের হওয়ার কথা থাকলেও নাস্তা করতে দেরি হলো। নাস্তা আসার ফাঁকে জসীম পূর্বজন্মের কথা স্মরণ করেই কিনা জানি না তার নখে নেইল পলিশ লাগালো। অবশেষে ১০টা ৩০-এ অন্যভাবে যাওয়ার চিন্তা বাদ দিয়ে উঠলাম আমাদের এ যুগের পেগাসাসে অর্থাৎ মাইক্রোবাসে। আমাদের সারথি হলেন মানসুর ভাই। কামারুল নামের সিলেট নিবাসী আমাদের এক বন্ধুরো ডাকনাম মনসুর তাই সে না থেকেও আমাদের সাথেই থাকল। ক্লাসের মত আমার স্থান হল ব্যাক বেঞ্চে। আমার সাথে আর দুই অভাগা জসীম ও মাসুম।
প্রথমে গেলাম জাফলং-এর খালাতো ভাই বিছানাকান্দিতে। পথে তন্বী যাত্রাজনিত ধকলে অসুস্থ হয়ে পড়ল। গাড়ী থেকে নেমে হাঁটলাম কিছুক্ষণ। তারপর ভটভটি ভ্রমণ মানে ইঞ্জিন চালিত নৌকা করে গেলাম মূল জায়গায়। আমাদের সার সাগরের মাঝি ছিল একটি বাচ্চা ছেলে যাকে যাত্রা শেষে বকশিশ দিল মাসুম। এটিই বাংলাদেশের শেষ সীমানা। তাই ভারতের পাহাড়গুলোর হাতছানিতে সীমানা পেরিয়ে এক পা যাওয়ার লোভ সামলাতে পারলাম না। ফলাফল আমার পায়ের বৃদ্ধাংগুল রক্তাক্ত। এরপর সারি-গুয়াইন ঘাটে চলল যুগপৎ ইনপুট ও আউটপুট।
পরবর্তী গন্তব্য লালখাল। নামে লাল হলেও খালটির পানি নীল। কিন্তু আমাদের মুখগুলো খাল দেখে লাল হয়ে গেল। কারণ এখানে রিভার কুইন হোটেল আমাদের জন্য নয় আর খালটি তেমন অসাধারণ নয়। তবে যাত্রাপথে ইলিয়াসের ভুঁড়ি নিয়ে আলোচনা, খুলনা ও কুমিল্লার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই আর জসীমের মানিব্যাগ হাসির ফুলঝুরি ছুটিয়েছিল।
এরপর গেলাম সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুল। নেমেই কাঁচারাস্তার ভরতনাট্যম প্রভাব কাটাতে চলল চা চক্র। সময়টা সন্ধ্যা ছিল বলে নৌকা নিয়ে মূল জায়গায় যাওয়া হল না। তাই অ্যাডভান্স টিম হিসেবে আমি আর জসীম গিয়ে এর একটা প্রতিবেদনের দায়িত্ব পেলাম। তবে আমাদের অনুগমন করল মি ও মিসেস সাহা। সময় বাড়ার সাথে সাথে তন্বীর অসুস্থতা বেড়েই চলছিল। তার মধ্যে মড়ার উপর খড়ার ঘা হিসেবে ইলিয়াস তন্বীর হাতের ওপর বসে পড়ল। ইলিয়াসের ওজন সম্পর্কে যাদের ন্যুনতম ধারণা আছে তাদের আশা করি আর কিছু না বললেও চলবে।
২৮ তারখের অভিযান শুরু করেছিলাম ৮জন আর শেষ করে হোটেলে থাকলাম ৭জন। ইলিয়াসকে চলে যেতে হল অনিবার্য কারণবশত। ব্যয় সংকোচনের জন্য ৩০৩নং রুমকে বিদায় জানালাম। অনেক কষ্টে মেয়েদেরকে যখন রাতের খাবার খেতে বাইরে নিয়ে যাবো তখন জসীম তালা খুলে কোথায় রেখেছে তা কোনক্রমেই মনে করতে পারল না। তালা কেলেংকারী ঘুচাতে পুরো রুমে চিরুনী অভিযান চালিয়েও যখন তালা পাওয়া যাচ্ছিল না তখন জাকিয়া দরজার পিছন থেকে তালা বের করল যেখানে এর আগে জসীম ২ বার খুঁজেছিল। ৫ ভাই-এ গিয়ে জীবনে প্রথমবারের মত আস্ত কোয়েল পাখি দিয়ে রাতের ভোজ শেষ করলাম। রাতে জীবনে প্রথমবারের মত বিল্বফল খেতে খেতে মহিলা হোস্টেলে গিয়ে মাসুম বাদে সবাই চ্যাম্পিয়ন ও কল ব্রিজ খেললাম। জসীম ও তন্বীর বাদানুবাদে যখন খেলা পন্ড হল তখন ঘড়িতে দেড়টা বাজে।
২৮ তারিখের ভুল পরের সকালে আর করলাম না। আজকের দিনটা শুরু হল রুমমেট মাসুম ও জসীমের ম্যাজিক শোর শব্দে। আরেকটি শো হল আজ যেখানে পারফর্মার রাহুল আর একমাত্র দর্শক জসীম। শো শেষে গ্রিন গার্ডেনকে বিদায় জানিয়ে বের হলাম ৮টায়। আজ প্রমোশন পেয়ে বাসের ১ম সিটে বসলাম।
আজ দিনটা শুরু করলাম ধর্মীয় দরগাহ দিয়ে অর্থাৎ শাহ জালালের মাজার দিয়ে। যাওয়ার সাথে সাথে জসীমকে জালালী কবুতরগুলো বর্জ্যপাত দ্বারা অভ্যর্থনা জানাল। অপমানের এই শেষ নয়, মাছগুলোও তার দেওয়া খাবার খেল না। এদেশ যে জ্ঞান বিজ্ঞানে এগিয়ে যাচ্ছে তা আর বুঝতে বাকী থাকল না। আমার এক সময়ের আইকন সালমান শাহের কবরও দেখলাম এখানে।
এরপর আইডি কার্ড জমা দিয়ে ঢুকলাম শাহ জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখানকার জালালীয় এলাকায় জসীম ভাল সম্মান পেল, তাকে একজন মনে করল সে ঢাবির শিক্ষক। এখানকার টিলা আমাদের বেশ ভাল সময় উপহার দিল। ফেরার পথে হাসন রাজা ও শাহ আব্দুল করিম কে নিয়ে ড্রাইভার মনসুর ভাই একটি নাতিদীর্ঘ বক্তৃতা দিলেন।
কুশিয়ারা পার হয়ে এবারে গেলাম গ্র্যান্ড সুলতান হোটেলে। রাজকীয় কায়দায় সম্ভাষণ পেলেও একে আমার সাদ্দাদের বেহেশতের চেয়ে বেশি কিছু মনে হয় নি। এই কৃত্রিম কংক্রিটের কারাগারে বসে রেগুলার চা খেলাম প্রতি কাপ ১১৭ টাকা করে। এখানে আসতে আসতেই জসীমের নাম বিবর্তিত হয়ে হল শ্রী দিগম্বুরা।
নুর হোটেলে মনসুর ভাইয়ের সাথে লাস্ট লাঞ্চ করলাম।
পরবর্তীতে লাউয়াছড়া উদ্যানে ঘুরলাম। এটি একটি অভয়ারণ্য হলেও সময় কম বলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের সাথে দেখা আর ৭ স্তরের চা খাওয়া হল না।
পিক আপে ফেরার পথে চা বাগানে নামলাম। কারণ চা ছাড়া সিলেট সম্পূর্ণ না। এটি ছিল তন্বির প্রথম পিক আপ ভ্রমণ। ও কিছু চা ফুল আনল যার সুবাস ছিল অনন্য।
শ্রীমঙ্গল রেল স্টেশনে ঘটল অমঙ্গল। এখানে পা দিলাম, এক হেলেনকে দেখলাম আর প্রেমে পড়লাম। সিলেট দুর্বোদ্ধ ভাষার কম ঘনবসতিপূর্ণ গোঁড়া এলাকা হলেও সিলেট ছাড়ার শেষ দিকে এ আমার চোখ জুড়িয়ে দিল। সাহসী হয়ে চা ফুল নিয়ে তাকে প্রেম নিবেদন করতে গিয়ে দেখি সে তার মার সাথে রিক্সায় চলে যাচ্ছে। সবার অলক্ষে কয়েকটা চোখাচোখির পর একটা ধ্রুপদী ট্র্যাজেডি ঘটে গেল। তবে মাথায় একটা কবিতার আইডিয়া জন্ম নিল। কোনদিন হয়তো তা খুলির দেয়াল ভেদ করে বৃষ্টির মত কলমের নিবে এসে সাদা কাগুজে জমিন উর্বর করবে।
ওয়েটিং রুমে বসে থাকতে থাকতে সাতকড়া কিনতে বের হলাম। জসীমের নামটার আরেকটি সংস্করন বের হলো জিসম। এখানে সন্ধ্যায় শুয়ে মাসুম গগলস দিয়ে সূর্য দেখতে লাগল। আরেক দফায় জাকিয়াকে নিয়ে কফি ও চায়ে চুমুক দিতে দিতে গল্প করলাম। এসে দেখি ওয়েটিং রুমের পাগল-ছাগল আর মাদকাসক্তরা আমাদের বান্ধবীদের উত্যক্ত করেছে। ফলে আমরা হলাম উত্তপ্ত। জেন্ডার ইডুকেশন পড়ার আগে থেকেই আমি নারীদের মানুষ মনে করি বলে এমন এক কথা বললাম যা পরিস্থিতিকে আমাদের প্রতিকূল করে তুলল। স্থানীয়দের সাথে বিবাদের ফলে আমদের জীবন সংশয় তৈরি হল। সারা সময় আমি আর জসীম হেঁটে সবার আগে চলে আসলেও এই পরিস্থিতি পড়ে মেয়েরাও ভারী ব্যাগগুলো নিয়ে অনায়াসে প্রায় দৌড়াতে লাগল।
অবশেষে হানিফ বাস কাউন্টারে পৌঁছে সাড়ে ১২টার বাসের টিকেট কাটলাম। ভাগ্যিস নেক্সাসের টাকাগুলো পকেটে ছিল। ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা সময়টুকু চরম উৎকন্ঠায় কাটছিল সবার। এর মাঝে রাতের খাবারের পালা এল। আমি অতিরিক্ত চা গেলায় খাব না বলে আমার উপর দায়িত্ব পড়ল মাল-সামানা দেখাশোনার। একা অপরিচিত প্রতিকূল পরিবেশে বসে আমার অবস্থা খুব সুখকর অবশ্যই ছিল না। শেষ পর্যন্ত ভালয় ভালয় বাসে উঠলাম ও ভোর সাড়ে ৪টায় রূপসী বাংলা হোটেলের সামনে নামলাম। এরপর শামসুন্নাহার হলের সামনে বসে চলল খরচের হিসাব, পুনঃপর্যালোচনা ও বিষোদগার। তবে ব্যর্থতা-সফলতায় শেষদিনটি ছিল পুরোপুরি মাসুমময়।
এই কয়দিন আমি সময়যন্ত্রের সাথে দৌড় প্রতিযোগিতায় নেমেছিলাম। আর ভ্রমণ শেষে এত স্মৃতি জমল যে মনে হল কেটে গেছে কয়েক শত বছর। তাহলে পাঠক বুঝে নিন এই অসম প্রতিযোগিতার পুরষ্কার শেষ পর্যন্ত কার হাতে উঠল। wink emoticon
এই ভ্রমণের অস্থির ছবিগুলো দেখতে পাবেন https://www.facebook.com/media/set/… ঠিকানায়। আর ছবিগুলোর জন্য রুমমেট ছোট ভাই Juwel Hassan -এর অবশ্যই আমার কাছ থেকে একটা বিশেষ ধন্যবাদ পাওনা কারণ আমার হাতের ক্যামেরাখানা তো তারই ছিল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন